একদিন প্রস্রাব করার পর মনের ভুলে কমোড ফ্ল্যাশ না করে আমি বেড়িয়ে আসি। কিছুক্ষণ পর আমার স্ত্রী টয়লেটে ঢুকে চিত্রটি দেখে ফেলে। সে টয়লেট ফ্ল্যাশ করে চলে আসে। কমোডে রক্ত মিশ্রিত আমার প্রসাব দেখে সে বিচলিত হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করে, আমি কেন এ ভয়াবহ অবস্থার কথা তাকে আগে জানায়নি। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে কঠিন পথ চলতেই ফুরিয়ে গেছে নিজের গুরুত্বপ‚র্ণ সময়। আমার স্ত্রী তার ভাইদের সাথে আলাপ করে হাসপতালে এক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে আমাকে দেখাবার সময় ঠিক করে। নির্ধারিত সময়ে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় ডাক্তারের কাছে। ডাক্তারের কাছে আমার সমস্যার কথা খুলে বলি। তিনি প্রাথমিকভাবে আমাকে কিছু পরীক্ষা করেন। তারপর বিস্তারিত জানার জন্য রক্ত পরীক্ষা ও সিটিস্কান সহ আরো প্রয়োজনীয় পরিক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। ডাক্তার রিপোর্ট দেখে আমাকে বলেন, আমার প্রোস্টেট গ্লান্ডে চাকারমত একটি ছোট্ট সমস্যা তৈরি হয়েছে। যা ছোট একটি অপারেশনে ঠিক হয়ে যাবে। আমার অপারেশন হয়ে যায়। ডাক্তার সাহেব বায়োপসি করার জন্য রাতুলের কাছে স্যাম্পোল দিয়ে ধানমন্ডি আনোয়ারা হাসপাতালে পাঠায়। এদিকে সারা রাত আমাকে অবজারভেশনে রেখে পরের দিন কেবিনে পাঠিয়ে দেয়। চারদিন পর আমাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে ডাক্তার সাহেব বললেন, বায়োপসির রিপোর্টটি তাকে দেখাতে। আমি তখনই এই পরীক্ষার কথা জানতে পারি। আমি বাসায় চলে আসার দুইদিন পর রাতুল সকাল নটা দশটার দিকে আনোয়ারা হাসপাতাল থেকে বায়োপসি রিপোর্টটি তুলে সেন্ট্রাল হাসপাতালে আমাকে যে ডাক্তার অপারেশন করেছিলেন তাকে দেখায়।
বিকেলের দিকে তৌহীদ ভাই ও সোনিয়া আমাদের বাসায় আসেন। আমরা সবাই ড্রয়িং রুমে বসা। তৌহীদ ভাই আমাকে ডেকে তার বাম পাশে এবং আমার স্ত্রী’র ডানপাশে বসতে বললেন। আমি অবাক হয়ে তৌহীদ ভাই’র দিকে তাকিয়ে আছি। আমার কাছে মনে হলো, আজকের তৌহীদ ভাই আর আগের তৌহীদ ভাই এক নয়। মুখ ভার। ওনার কথার শুরুতেই আমাকে বললেন, জানি আপনি শক্ত মনের মানুষ, সাহসী মানুষ তাই আপনাকে সরাসরি বলছি আপনার ক্যান্সার ধরা পরেছে। এখনি আপনাকে নিয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে যেতে হবে এক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের সাথে আলাপ করতে। আমি ঘাবড়ে যাইনি। শুধু একটি কথাই ভাবলাম, একদিন মরতে হবে। আমি মৃত্যুকে ভয় পাইনা। মৃত্যুকে উপভোগ করতে চাই। আমার মৃত্যু যেন সেভাবেই ঘটে। আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো ধানমন্ডি ল্যাবএইড হাসপাতালে। আগে থেকেই ডাক্তারের সাথে তৌহীদ ভাই কথা বলে রেখেছিলেন। ফলে তাড়াতাড়ি ডাক্তার সাহেবের দেখা পেয়ে গেলাম। ডাক্তার সাহেবকে আমার সম্পর্কে হয়তোবা আগে থেকেই বলা ছিল। ওনি আমার বায়োপসি রিপোর্ট দেখে তার প্যাডে ছবি একে যা বললেন তার সারকথা হলো, আমার ম‚ত্রথলিতে একটি উচ্চ মাত্রার ক্যান্সার ধরা পড়েছে এবং ম‚ত্রথলিটি অপারেশন করে ফেলে দিতে হবে। তৌহীদ ভাই আমাদের সকলের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্তটি পরে জানানো হবে বলে ডাক্তার সাহেবের রুম থেকে আমাদের নিয়ে তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসেন। আমাদের সবাইকে তার বাসায় নিয়ে গিয়ে আমাদের সকলের মতামত জানতে চাইলেন এবং তার নিজের মতামত জানালেন। আমাদের সকলের একই মত ম‚ত্রথলি অপারেশন ছাড়া আর কোন উপায় আছে কি না? তৌহীদ ভাই হায়দ্রাবাদ এপোলো হাসপাতালের কথা বলে সেখানে সায়ন পাল নামে তার এক পরিচিত ডাক্তার আছেন যিনি এ রোগের বিশেষজ্ঞ। তৌহীদ ভাই ইতিমধ্যেই তার কাছে আমার বায়োপসি রিপোর্টটি পাঠিয়ে দিয়েছেন। ডা. সায়ন পাল তাড়াতাড়ি করে আমাকে হায়দ্রাবাদ এপোলো হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো হায়দ্রাবাদ এপোলো হাসপাতালে ডা. সায়ন পালের কাছে। তিনি আমার ও আমার সাথে থাকা পরিবারের সকলের কথা ধৈর্য ধরে শুনেন। তারপর যাবতীয় পরীক্ষা সম্পন্ন করার পর দেখা যায় আমার আমি এক কঠিন ও জটিল ক্যান্সার সমস্যায় আক্রান্ত যা সারা পৃথিবীতে বিরল। ডা. সায়ন পাল থামবার পাত্র নন। তিনি তাঁর দায়িত্ব পালনের পবিত্র শপথ থেকে বিচ্যুত না হয়ে দেশ-বিদেশের অনেক বিশেষজ্ঞের সাথে পরার্মশ করে আমার চিকিৎসার সুনিপুন একটি পরিকল্পনা করেন এবং আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। দীর্ঘ সময় ধরে আমার চিকিৎসা চলে। আমাকে রেডিও থেরাপী দেয়া হয়। প্রায় তিন মাস চিকিৎসা নেয়ার পর আমার ক্যান্সার ভালো হয়ে যায়। আমি দেশে ফিরে আসি। উড়োজাহাজ থেকে দেশের মাটিতে নেমেইে আমি মাটিতে হাত ষ্পর্শ করি এবং সেই হাত আমার কপালে ষ্পর্শ করি।
এই যে ভাল হয়ে দেশে ফেরা এর পিছনে যদিও হায়দ্রাবাদ এপোলো হাসপাতালের অনেকের অবদান রয়েছে। তারপরও একজন ডা. সায়ন পাল তাঁর জ্ঞান, দক্ষতা, আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গী, বিশ্বাসও ভালবাসার মাধ্যমে সবাইকে ছাপিয়ে আমার কাছে, আমার পরিবারের কাছে একজন মহান ব্যক্তি ও ত্রাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। আমার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী ও পরিচিত জনদের মাঝেও তাঁর অবস্থান ও সুখ্যাতি একটি ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। তাই-তো বাংলাদেশ থেকে অনেক রোগী তাঁর সাথে যোগাযোগ করে এবং চিকিৎসার জন্য তাঁর কাছে ছুটে যায়।

I appreciate Dr Paul from the core of my heart, for the medical prescription, guidance and timely suggestion in my cancer treatment journey till date. I find you highly knowledgeable. Most importantly, the way you simplify and explain the treatment plan, its so logical and wins the trust. Apart from rich subject knowledge, I really admire the way you infuse that with practical relevance. And that matters a lot! Specifically on radiation treatment, I was so scared thinking its implication and side effects. But then, your technical expertise together with balanced dose and close monitoring, made it so easy and smooth. Thanks very much! you are awesome…